সম্পর্ক ভালো রাখতে একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা বোকামি। সম্পর্কে প্রয়োজন সম্মান। বর হিসেবে যাকে পেয়েছেন সে কিন্তু ওই শাশুড়ি মায়ের সন্তান। সুতরাং বরকে নিয়ে শাশুড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে যাবেন না। বরের সামনে এমনটা দেখাতে যাবেন না যে- আপনি শাশুড়ির থেকে সব দিকেই ভাল। এটুকু মেনে শাশুড়ির সঙ্গে কেমন সম্পর্ক গড়বেন তা ঠিক করে নিন।
সম্মান করুন: আপনার শাশুড়ি বয়সে বড়, অভিজ্ঞতাও বেশি। তিনি দীর্ঘদিন সংসার সামলাতে- সামলাতে আপনার থেকে দক্ষও বেশি। এ কথা মাঝে মাঝে মেনে নিলে ক্ষতি নেই। শাশুড়ির প্রতি সম্মান শ্বশুরবাড়িতে আপনার জায়গা অনেক বেশি পোক্ত করবে।
শাশুড়িকে একা রাখবেন না: আপনার বরকে বলুন মায়ের সঙ্গেও সময় কাটাতে। ঘরে ফিরেই মাকে আলাদা ঘরে ফেলে দুজনে গল্পে মত্ত হবেন না। ওই মানুষটা ভেতরে ভেতরে অসহায় হয়ে পড়বে। একসঙ্গে খেতে বসার অভ্যাস করতে পারেন। অন্ততপক্ষে রাতের খাবারটা একসঙ্গে খান, গল্প করুন। তার কথা শুনুন। গল্প করতে করতে বুঝে যাবেন তার প্রিয় গল্প কোনগুলো। একই গল্প দ্বিতীয়বার করলে থামিয়ে দেবেন না। এতে তিনি অপমান বোধ করতে পারেন।
নিজের কথা ভাবুন: এই যে ছেলেকে বিয়ে দিয়েই আপনি যদি মনে করেন এতোদিনে তিলে তিলে গড়ে তোলা সংসার এবার বুঝি গেল। তাহলে ভুল করছেন। আপনিও কারও বাড়ির বউ হয়ে এসেছিলেন। নিজের ফেলে আসা জীবনের কথা একবার ভাবুন। বরং যে যে সমস্যায় পড়েছিলেন সেগুলোতে নিজের বউমাকে পড়তে দেবেন না।
রাগ পুষে রাখবেন না: বউমার কথায় আঘাত পেলে সেই রাগ মনে পুষে রাখবেন না। কথায় কথায় বউমাকে বুঝিয়ে দিন, আপনি তার কথায় কষ্ট পেয়েছেন। তবে ঝগড়া-অশান্তির ছলে নয়, শান্ত ভাবে আপনার সমস্যার কথা তাকে জানান। আপনার কোনো কথা তার খারাপ লাগলে তাকেও জানাতে বলুন। এ ভাবেই সম্পর্কের তিক্ততা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
বউমার ইচ্ছাগুলোর যত্ন নিন: একটু ফিউশনধর্মী রন্না, জন্মদিনটা পালন করা, অফিস থেকে ফিরে একটু গুটিয়ে থাকা-এ অভ্যাসগুলোকে খারাপ চোখে দেখবেন না। মানুষ এখন মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ পায় খুব কম। নানা রকম আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে মানুষ মানুষের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করছে। এগুলো একটু ভাবুন। আর সময় বদলেছে তাই সবকিছুতেই কিছুটা পরিবর্তন দেখতে পাবেন।
কর্মক্ষেত্র নিয়ে গল্প করুন: আপনার কর্মক্ষেত্র নিয়ে শাশুড়ির সঙ্গে মতবিরোধ চলছে? প্রথমে একটা কথা মাথায় নিতে পারেন, তিনি কিন্তু আগের প্রজন্মের মানুষ। তাই আপনার কাজ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না-ও থাকতে পারে। এক্ষেত্রে অবজ্ঞা না করে বরং কয়েক দিন আপনার কাজ, কর্মক্ষেত্র নিয়ে গল্প করুন শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে। বাইরের জগৎ সম্পর্কে শাশুড়ির ধারণা তৈরি করুন। দেখবেন সমস্যা অনেকটাই কমেছে।
সরাসরি সমালোচনা করবেন না: বয়স হলে মানুষ অভিমানী হয়ে পড়েন। অভিমানকে রাগ ভাববেন না। অল্পতেই তারা রেগে যান, আবার অল্পতেই রাগ কমে যায়। এমনটা আপনার বাবা-মায়ের ক্ষেত্রেও হয় নিশ্চয়ই। তাদের বদলে যাওয়াটাও একটু খেয়াল করবেন। এতে পরিষ্কার ধারনা পাবেন। শাশুড়ি কোনো সমালোচনা করলে সাথে সাথে পাল্টা উত্তর দেবেন না। আবার তার কোনো ভুল সামনে পরলে গল্পের ছলে সেই ভুল শুধরে দিন। একে অপরের সঙ্গে কথাবার্তা বাড়লেই তো সম্পর্কের ভিত মজবুত হবে।