আবু বকর (রা.) ছিলেন আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অন্যতম প্রধান ও প্রিয় সাহাবি। ইসলামের আবির্ভাবের পর প্রথম দিকে ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে তিনি একজন। বলা হয় প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন মক্কার সর্বজনপ্রিয় ও প্রভাবশালী একজন ব্যক্তি। আভিজাত্য, ভদ্রতা ও সুচরিত্রের জন্য তিনি সুপরিচিত ছিলেন। তার ইসলাম গ্রহণ অন্য অনেককেই ইসলাম গ্রহণে উৎসাহ যোগায়।
আবু সাইদ খুদরি (রা.) বলেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদিন খুতবা দিতে দাঁড়িয়ে বললেন, আল্লাহ তাআলা তার বান্দাকে দুনিয়া ও আল্লাহর কাছে যা আছে-এ দুয়ের মধ্যে একটি গ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন। তিনি আল্লাহর কাছে যা আছে, তা গ্রহণ করেছেন।
এ কথা শুনে আবু বকর (রা.) কেঁদে ফেললেন। আমি মনে মনে ভাবলাম, এই বৃদ্ধ কাঁদছেন কেন? আল্লাহ তার এক বান্দাকে দুনিয়া ও আল্লাহর কাছে যা আছে-এ দুয়ের একটা গ্রহণ করার এখতিয়ার দিলে তিনি আল্লাহর কাছে যা আছে তা গ্রহণ করেছেন। এখানে কাঁদার মতো কী আছে! আমি বুঝতে পারিনি আল্লাহর রাসুলই (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ছিলেন সেই বান্দা। এটা ছিল তার বিদায়ের ইঙ্গিত। আবু বকর (রা.) ছিলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি।
নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবু বকরকে কাঁদতে দেখে বললেন, আবু বকর, তুমি কাঁদবে না। নিজের সাহচর্য ও সম্পদ দিয়ে আমার প্রতি যিনি সবচেয়ে বেশি অনুগ্রহ করেছেন, তিনি আবু বকর। (সহিহ বুখারি: ৪৬৬)
নবুয়্যতপ্রাপ্তির আগ থেকেই নবিজির (সা.) সাথে তার অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব ছিল। ইসলাম গ্রহণের পর তিনি ইসলামের একজন প্রচারক ও তার প্রধান সাহায্যকারীতে পরিণত হন। মেয়ে আয়েশাকে নবিজির (সা.) কাছে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে নবিজির (সা.) সাথে তার আত্মীয়তার সম্পর্কও স্থাপিত হয়।
রাসুল (সা.) যেমন তাকে তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু মনে করতেন, নবিজির (সা.) প্রতিও তার অনুরাগ ও ভালোবাসা ছিল সর্বাধিক। নবিজি কখনও নিজের মৃত্যু বা বিদায়ের কথা বললে তিনি কেঁদে ফেলতেন।