গতকাল ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেও স্টেডিয়ামের সামনে ছিল রোহিত আর বিরাটের নামে জয় জয় স্লোগান। লাখের গ্যালারিতে শুধুই তাদের বন্দনা। তাদের বিশ্বাস– তারা দু’জনই অমোঘ কোনো অন্বেষণে অশেষ দ্যুতি ছড়িয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারেন। সেই কাকডাকা ভোর থেকেই গোটা আহমেদাবাদে নীল জার্সির কলতান। ম্যাচ শুরুর পর টইটম্বুর গ্যালারিতে সেই হাজার ডেসিবলের স্লোগান– জয় হো…।
বিশ্বকাপে হাজার হাজার রান দেখে চোখগুলো চাইছিল তেমনই কিছু হোক আজ। শুরুতে রোহিত শর্মাও তেমনই চালাচ্ছিলেন। কখনও ফ্রন্টফুটে গিয়ে পুল, কখনও ডাউন দ্য উইকেটে এসে ছক্কা। বছর ছত্রিশের রোহিতের জন্য এটাই হয়তো শেষ বিশ্বকাপ। সেটা হলে এদিনই ছিল তাঁর শেষ ব্যাটিংয়ের মঞ্চ। পুরোপুরি উপভোগ করে ব্যাট চালাচ্ছিলেন তিনি। সাধারণত এমন দেখা যায়, ওপেনিং জুটিতে সিনিয়র কেউ থাকলে তিনি কিছুটা গুটিয়ে থাকেন, জুনিয়রকে ফ্রি লাইসেন্স দেওয়া হয় ফায়ারিংয়ের জন্য। কিন্তু অদ্ভুতভাবে রোহিতই ভূমিকায়। ব্যক্তিগত রানের ঝুলি সমৃদ্ধ করার নিরাপদ পথে তিনি হাঁটেননি।
এদিনই যেমন ভারতের রান যখন ৪০, তখন রোহিতের একারই ৩২। শুভমান গিলের স্ট্রাইক রেট যেখানে ছিল ৫৭, সেখানে রোহিত ছুটেছেন ১৫১-এর গতিতে। রোহিতের এই শুরুটাই ভারতকে গোটা আসরে আত্মবিশ্বাস দেখিয়েছে। এদিন ম্যাক্সওয়েলের ওপর উপর্যুপরি চড়াও হতে গিয়ে আউট হয়েছেন ৪৭ রানে। একটি রেকর্ড এদিন তিনি মাঠে রেখে গেছেন, ১১ ম্যাচে ৫৯৭ রান। রেকর্ড বলছে, এর আগে বিশ্বকাপের কোনো অধিনায়ক এত রান করেননি। গত বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন করেছিলেন ৫৭৮। এদিন রোহিত আর কোহলিকে যখন একসঙ্গে বাইশ গজে পেয়েছিল আহমেদাবাদ, চার-পাঁচ গুণ দাম দিয়ে টিকিট কেনা দর্শক যেন হাতে চাঁদ পেয়েছিল তখন। দুইশ রুপির সেই জার্সির সরল ভালোবাসা চোখে পড়েছিল প্রেস বক্সের ভারতীয় সাংবাদিকদের মধ্যেও।
প্রত্যেকেরই বিশ্বাস ছিল, রোহিতের প্রস্থানের পর বিরাটই সামলাবেন। সেভাবে ইনিংসও এগোচ্ছিলেন তিনি। পঞ্চাশ রান পূরণ করেছিলেন, যার মধ্যে ৩২ বার তিনি দৌড়ে রান নিয়েছিলেন। এতটা সতর্ক থাকার পরও কামিন্সের একটি বল ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হয়ে যান। নিস্তবদ্ধতা নেমে আসে ঠিক তখন থেকেই। কোহলি নিজেও কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। পুরো মাঠে ১১ অসি ক্রিকেটারের উল্লাস তখন তীক্ষ্ণ তীরের মতো প্রতিধ্বনি হয়ে প্রতিটি দর্শকের কানে বাজছিল!
মাঠের ডিজে নাকি কথা দিয়েছিলেন, পুরো গ্যালারিকে তাতিয়ে রাখবেন। কিন্তু তিনি ভুল জানতেন। রোহিত আর বিরাটের আরাধনা ফুরিয়ে গেলে কোনো কিছু দিয়েই বোধ হয় নীল সমুদ্রে ঢেউ তোলা যায় না। এই বিশ্বকাপে ১১ ম্যাচে ৭৬৫ রান করে বিরাট কোহলি যে রেকর্ড গড়েছেন, তা কবে কোথায় কে ভাঙতে পারবে, তা হয়তো সময়ই বলে দেবে। তবে সময় বোধ হয় এটা বলে দিয়েছে, প্রজন্ম তুমি রোহিত-বিরাট উত্তর কোনো ঠিকানা খুঁজে নাও। হয়তো ওই বাচ্চা ছেলেটির মতোই শুভমান গিলের কোনো জার্সি নম্বরে।
Trending
- হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে ডিপজল
- সৌদি বাদশাহ আবারো অসুস্থ
- কাতারের আমীরকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা দেয়া হয় ঢাকা বিমানবন্দরে
- আলবার্টা পার্লামেন্টে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত
- তাইওয়ানে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর প্রায় ১শ’ ভূকম্পন অনুভূত
- অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি নিরাপত্তা পরিষদের
- জাতিসংঘ সংস্থার প্রধানকে গাজায় প্রবেশে বাধা ইসরায়েলের
- বেইলি রোডে আগুন : উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে দিয়েছে হাইকোর্ট