সোমবার ২৫ ডিসেম্বর বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনারদের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আপনাদের মতো দুদিনের দলদাসদের রক্তচক্ষু দেখার জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। এই একদলীয় ভোট জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। ভয়ভীতি-কেরামতি যাই করেন, কেন্দ্রে কোনো ভোটার পাবেন না। এই ফলাফল ঘোষণার নির্বাচনের বিরুদ্ধে সারাদেশ আজ ঐক্যবদ্ধ।
রিজভী বলেন, ‘আগামী ৭ জানুয়ারির আসন ভাগবাটোয়ারার নির্বাচন জমছে না দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে পুরো আওয়ামী চক্র-দলদাস রাষ্ট্রযন্ত্র। এখন তারা ভোটারদের হুমকি-ধামকি দিতে শুরু করেছেন। গোটা দেশকে অভাবনীয় নরকপুরীতে পরিণত করেছে। পুরো বাংলাদেশকে জেলখানা বানানো হয়েছে। জেলের ভেতরে যাদের নিক্ষেপ করা হয়েছে তাদের তিলে তিলে নির্যাতন করে হত্যা করা হচ্ছে।’
‘একদিকে নৌকার প্রার্থী ও তাদের প্রচারকরা হুমকি দিচ্ছেন ভোটকেন্দ্রে না গেলে বাড়িছাড়া করা হবে, অপরদিকে নির্বাচন কমিশনাররা জেল-জরিমানার হুমকি দিচ্ছেন। কেউ ভোট প্রতিহত করার চেষ্টা করলে সাত বছরের জেল হবে, অর্থদণ্ড হবে। ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য লিফলেট বিতরণ করলে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। ইসি মো. আনিছুর রহমানের ঔদ্ধত্য এবং হুমকি-হুংকার দেখে মনে হচ্ছে তিনি অস্তিত্ব ভুলে আওয়ামী সেবাদাসত্ব করছেন। প্রতিদিন গণভবন থেকে আসা ফরমান ঘোষণা করছেন-’ বলেন রিজভী।
রিজভী দাবি করেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি এবং এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ১৯৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আট মামলায় ৭৮৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসময়ে ২০ জন নেতাকর্মী আহত এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘দেড় দশক ধরে জগদ্দল পাথরের মতো বাংলাদেশের ঘাড়ে চেপে বসা দৈত্যের পতন এবং একতরফা পাতানো নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ১৮ কোটি জনগণকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গলির গুন্ডাদের মতো শাসাচ্ছেন। বিএনপিকে শায়েস্তা করার হুমকি দিচ্ছেন আনিছুর রহমানরা। পুলিশকে লেলিয়ে দিচ্ছেন। বাংলাদেশের নাগরিকদের গোলাম ভাবা শুরু করেছেন।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গোলামির পরীক্ষায় শ্রেষ্ঠত্ব পাওয়ার কোটায় নির্বাচন কমিশনার হওয়া এই ব্যক্তির জেনে রাখা উচিত দেশের সংবিধানে ভোট দেওয়াও যেমন মানুষের অধিকার, তেমনি ভোট না দেওয়াও মানুষের মৌলিক অধিকার। ভোট দেওয়ার জন্য কাউকে বাধ্য করা যাবে না। কিন্তু প্রতিটি জনপদে নৌকা এবং ডামির প্রার্থীরা ভোট দিতে না গেলে জনগণকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে নীরব এই আনিছুররা। ৭ তারিখে যারা ভোটকেন্দ্রে যাবে না তাদের গায়েবি নাশকতার মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। আনিছুরদের মতো আওয়ামী দলদাসদের বলে রাখি, অবৈধ নির্বাচনকে না বলার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার।