সাহাবি ও তাবেইদের কিছু বক্তব্যে বছরের পাঁচটি রাতকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ বলা হয়েছে; যে রাতগুলোতে জেগে ইবাদত করা ও দোয়া করা মুস্তাহাব এবং যে রাতগুলোতে আল্লাহ দোয়া কবুল করেন। রাতগুলো হলো, জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত। ইমাম শাফঈর (রহ.) কিতাবুল উম্ম-এ বলা হয়েছে, আমাদের কাছে পৌঁছেছে যে, বছরের পাঁচটি রাতে দোয়া কবুল হয়; জুমার রাতে, ইদুল আজহার রাতে, ইদুল ফিতরের রাতে, রজবের প্রথম রাতে, শাবানের ১৫ তারিখের রাতে। (আল উম্ম: ১/২৬৪)
কিন্তু রজবের প্রথম রাতের বিশেষ ফজিলত সম্বলিত কোনো বক্তব্য নির্ভরযোগ্য সূত্রে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে প্রমাণিত নয়। দায়লামি ও ইবনে আসাকিরের বর্ণনায় এ বক্তব্যটিকে আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) বক্তব্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আলেমরা এগুলোর সনদ খুবই দুর্বল বলেছেন, কেউ কেউ মাওজু’ বা বানোয়াটও বলেছেন।
তবে রজব মাসের ফজিলত সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য সনদে আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অনেক বক্তব্য পাওয়া যায়। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, যখন রজব মাস শুরু হতো, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ দোয়াটি পড়তেন—
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ وَشَعْبَانَ وَبلغنا رَمَضَانَ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান ওয়াবাল্লিগনা রমাদান।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত হায়াত দিন। (আলমুজামুল আওসাত: ৩৯৩৯)
সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘পাঁচটি রাত এমন আছে, যেগুলোতে বান্দার দোয়া আল্লাহ তাআলা ফিরিয়ে দেন না, অর্থাৎ অবশ্যই কবুল করেন। রাতগুলো হলো—জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭৯২৭)
ইমাম বায়হাকি তার আস-সুনান আল কুবরা কিতাবে এটি সাহাবি আবু দারদার (রা.) বক্তব্য হিসেবেও বর্ণনা করেছেন। (সুনানে বায়হাকি: ৬০৮৭)