দুর্ভাগ্যবশত, বুলিং এমন একটি ব্যাপার যা আপনার স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির গণ্ডি পেরিয়ে কর্মক্ষেত্রেও ঘটে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ওয়ার্কপ্লেসে ১৯ শতাংশ মানুষ তার সহকর্মীদের দ্বারা বুলিংয়ের শিকার হন। আরও ১৯ শতাংশ আছেন যারা এভাবে বুলিং হতে দেখেন।
রুখে দাঁড়ান: মনে রাখবেন আজকালকার দিনে কেউ কারও জন্য লড়ে না। নিজেরটা নিজেকেই বলতে হয়। তাই কোনো কিছুতে অস্বচ্ছন্দ্যবোধ করলে, পছন্দ না হলে স্পষ্ট করে বলুন। দৃঢ়তা রাখুন বক্তব্যে।
বন্ধু বানান: বুলিংয়ের জন্য তাদেরকেই টার্গেট করা হয় যারা অফিসে নতুন যোগ দিয়েছেন। কারণ সে একা, তার বন্ধু নেই, পরিচিত নেই। তাই বন্ধু বানান, পরিচিতি বাড়ান। যেই মুহুর্তে আপনার পক্ষে কথা বলার জন্য লোক তৈরি হবে তখনই এই জিনিসগুলো দেখবেন কমতে থাকবে।
সাহায্য চান: অফিসে সবাই কিন্তু বুলিং করেন না। আপনি নিশ্চয় বুঝবেন কে আপনার জন্য ঠিক, আর কে নয়। যখন বিপদের আশঙ্কা দেখবেন, তখন সাহায্য প্রার্থনা করুন।
খেয়াল করুন: আপনার কোম্পানির হিরো কারা, মানে কাদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। তাদের আচার-আচরণ লক্ষ্য করুন। তাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন এই হিরোরা অফিস বুলিংয়ের পক্ষে নাকি বিপক্ষে। নিশ্চয় তারা অফিসের ভালো পরিবেশ বজায় রাখতে চাইবেন। সময় সুযোগ বুঝে অফিস বুলিংয়ের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার অনুরোধ জানাতে পারেন।
অফিস বুলিং কী? যখন কেউ বা কারা ক্রমাগত আপনাকে নিশানা বানিয়ে দিনের পর দিন ডমিনেট করতে থাকেন, কুমন্তব্য করেন, কাজে খুঁজে খুঁজে ভুল বের করেন এবং সেটা বড় করে দেখান, কাজের সুযোগ দিতে চান না, অকারণে কথা শোনান; এগুলোই বুলিং।
অফিসে বুলিং- এর শিকার হলে মানসিক স্বাস্থ্য ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অফিসের বাইরেও আপনি চাপ অনুভব করতে পারেন। অবসাদ গ্রাস করতে পারে। এর ফলে দেখবেন কাজে ভুল বাড়ছে। অফিসে যেতে ইচ্ছে করবে না। এ কারনে ধীরে ধীরে সুস্থ জীবনের ভারসাম্য হারাবেন। সারাক্ষণ মাথাব্যথা, বিরক্তি, ইত্যাদি সঙ্গী হবে। এমন অবস্থা থেকে বের হওয়া খুব জরুরি।
প্রমাণ জোগাড় করুন: শুরুতেই অফিস বুলিংয়ের প্রতিবাদ করতে যাবেন না। সময় নিন। প্রমাণ জোগাড় করতে থাকুন। কে বুলিং করছে, কোথায় করছে, কেন করছে, কাদের সামনে করছে এগুলো দিন, তারিখ, স্থানসহ লিখে রাখবেন। অথরিটির সঙ্গে কথা বলার সময় প্রয়োজন হতে পারে। আর বস নিজেই যদি বুলিং করেন- মানে আপনি যে কাজ করছেন; সে কথা মানতেই না চান তাহলে কাজের একটা লিস্ট তৈরি করে রাখবেন। তিনি যখন তখন আপনার কাজের হিস্ট্রি চেক করতে পারেন। আপনি যদি ঠিকঠাক আপনার দায়িত্ব পালন করেন বস আপনার প্রতি ক্রমে ইতিবাচক মানসিকতার প্রকাশ দেখাবেন বলে আশা করা যায়।
নেতিবাচকতার সঙ্গে ইতিবাচকতার ভারসাম্য তৈরি করুন: অফিস বুলিং আপনাকে ট্রমাটাইজ করে ফেলতে পারে। একজন থেরাপিস্ট বা মনোবিদের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। কাছের মানুষদের সঙ্গে শেয়ার করে সাপোর্ট পেতে পারেন আবার সম্পর্কে বাড়তি চাপও তৈরি হতে পারে। নিজের দিকে মনোযোগ দিন। অফিসের বাইরে অফিসের চিন্তা দূরে রাখার চেষ্টা করুন।